+
-
R
[ দয়াময়,পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এটি একটি প্রাথমিক মক্কী সূরা। অল্প কয়েকটি শব্দের দ্বারা এই সূরাতে আল্লাহ্র একত্বের ঘোষণা প্রকাশ করা হয়েছে। এবং মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতাকে প্রকাশ করা হয়েছে।
[ দয়াময়,পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
৬২৯৬। আল্লাহ্র গুণাবলীর বৈশিষ্ট্য অল্প কয়েকটি কথার মাধ্যমে এই সূরাতে তুলে ধরা হয়েছে, যেনো আমরা তা বুঝতে পারি। সূরা [ ৫৯ : ২২ - ২৪ ], [ ৬২ : ১ ] এবং [ ২ : ২৫৫] আয়াতে আল্লাহ্র গুণাবলীর বর্ণনা আছে। এই সূরাতে বিশেষ ভাবে আল্লাহ্র কয়েকটি গুণাবলীর উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণ ভাবে মানুষ যে সব বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে বিভ্রান্ত হয়।
প্রথমতঃ বলা হয়েছে যে প্রকৃতিগত ভাবে আল্লাহ্ মহান, যে মহত্ব আমাদের মত সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে। নিরাকার আল্লাহ্র ধারণা হচ্ছে তিনি একক সত্ত্বা। তিনি আমাদের খুব কাছে থাকেন ও আমাদের সদয় তত্বাবধান করেন। আমাদের অস্তিত্বের জন্য আমরা আল্লাহ্র কাছে ঋণী।
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহ্ এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ্ই একমাত্র এবাদতের যোগ্য। সৃষ্টির আর কিছুই এবাদতের যোগ্য নয়।
তৃতীয়তঃ আল্লাহ্ অসীম অনন্ত এক সত্ত্বা যিনি কারও উপরে নির্ভরশীল নন বরং বিশ্বভুবনের সকলেই তাঁর করুণার উপরে নির্ভরশীল;
চতুর্থতঃ আল্লাহ্ এমন এক সত্ত্বা যিনি একক বৈশিষ্ট্যে মহিমান্বিত। তিনি কারও পিতা নন, কেউ তাঁর পুত্র নয়। যদি থাকতো তাহলে আল্লাহ্র মাঝে মানবিক বা প্রাণীর বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকতো। কিন্তু আল্লাহ্ এসব থেকে পূত ও পবিত্র।
পঞ্চমতঃ বিশ্ব ভূবনের এমন কিছু নাই যাকে আল্লাহ্র সাথে তুলনা করা যায়। আল্লাহ্র গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য অতুনীয়।
৬২৯৭। আল্লাহ্র একত্ব ও অদ্বিতীয় ধারণা বহু ঈশ্বরবাদের ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। বহু ঈশ্বর বাদের ধারণাতে মানুষ বিশ্বাস করে বহু দেব-দেবতায় যাদের বিভিন্ন ধরণের শক্তি বিদ্যমান। এই আয়াত দ্বারা সেই ধারণাকে সমূলে ধ্বংস করা হয়েছে।
৬২৯৮। 'Samad' এই শব্দটির অর্থ এক কথায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। শব্দটি দ্বারা দ্বিবিধ ভাব প্রকাশ করা হয় :
১) আল্লাহ্র অস্তিত্বই একমাত্র সত্য, এবং চিরস্থায়ী, আর সব কিছুই ক্ষণস্থায়ী।
২) আল্লাহ্ কারও উপরে নির্ভরশীল নন, বরং বিশ্বভূবনের সকল কিছুই তাঁর উপরে নির্ভরশীল।
৬২৯৯। এই আয়াত দ্বারা খৃষ্টবাদের 'পিতা-পুত্র ' ধারণার মূলে কুঠারাঘাত করা হয়েছে। খৃষ্টবাদে আল্লাহ্র গুণাবলীতে প্রাণী সুলভ প্রবৃত্তি আরোপ করা হয়েছে 'পিতা-পুত্র ' সম্পর্কের দ্বারা। এই আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ্ অনুরূপ অপবিত্রতা থেকে মুক্ত।
৬৩০০। এই একটি লাইনে সকল যুক্তিকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয়েছে। আমাদের সাবধান করা হয়েছে মানুষের সাধারণ প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে। সাধারণতঃ মানুষ নিজস্ব ধ্যান ধারণার বাইরে চিন্তা করতে ভালোবাসে না। সে কারণে মানুষ আল্লাহ্র গুণাবলীকেও মানুষের গুণাবলীর মোড়কে মুড়িয়ে দেখতে ভালোবাসে। সকল যুগেই দেখা যায় মানুষের এই প্রতারণামূলক অভ্যাস যে, মানুষ এবাদতের ব্যাপারে উপাস্য দেব-দেবীকে মানুষের তুল্য গুণাবলীতে ভূষিত দেখতে চায়। মানুষের এই প্রবণতাকে কঠোর ভাষাতে নিন্দা করা হয়েছে যে, মনে রাখতে হবে যে আল্লাহ্র সাথে তুলনীয় বিশ্বভূবনে কিছুই নাই। তিনি অতুলনীয়।
সূরা এখলাস
সূরা এখলাস বা [ঈমানের] পবিত্রতা - ১১২
৪ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী[ দয়াময়,পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এটি একটি প্রাথমিক মক্কী সূরা। অল্প কয়েকটি শব্দের দ্বারা এই সূরাতে আল্লাহ্র একত্বের ঘোষণা প্রকাশ করা হয়েছে। এবং মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতাকে প্রকাশ করা হয়েছে।
সূরা এখলাস বা [ ঈমানের ] পবিত্রতা - ১১২
৪ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী[ দয়াময়,পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। বল, তিনিই আল্লাহ্ ৬২৯৬ এক ও অদ্বিতীয় ৬২৯৭
৬২৯৬। আল্লাহ্র গুণাবলীর বৈশিষ্ট্য অল্প কয়েকটি কথার মাধ্যমে এই সূরাতে তুলে ধরা হয়েছে, যেনো আমরা তা বুঝতে পারি। সূরা [ ৫৯ : ২২ - ২৪ ], [ ৬২ : ১ ] এবং [ ২ : ২৫৫] আয়াতে আল্লাহ্র গুণাবলীর বর্ণনা আছে। এই সূরাতে বিশেষ ভাবে আল্লাহ্র কয়েকটি গুণাবলীর উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণ ভাবে মানুষ যে সব বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে বিভ্রান্ত হয়।
প্রথমতঃ বলা হয়েছে যে প্রকৃতিগত ভাবে আল্লাহ্ মহান, যে মহত্ব আমাদের মত সাধারণ মানুষের ধারণারও বাইরে। নিরাকার আল্লাহ্র ধারণা হচ্ছে তিনি একক সত্ত্বা। তিনি আমাদের খুব কাছে থাকেন ও আমাদের সদয় তত্বাবধান করেন। আমাদের অস্তিত্বের জন্য আমরা আল্লাহ্র কাছে ঋণী।
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহ্ এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ্ই একমাত্র এবাদতের যোগ্য। সৃষ্টির আর কিছুই এবাদতের যোগ্য নয়।
তৃতীয়তঃ আল্লাহ্ অসীম অনন্ত এক সত্ত্বা যিনি কারও উপরে নির্ভরশীল নন বরং বিশ্বভুবনের সকলেই তাঁর করুণার উপরে নির্ভরশীল;
চতুর্থতঃ আল্লাহ্ এমন এক সত্ত্বা যিনি একক বৈশিষ্ট্যে মহিমান্বিত। তিনি কারও পিতা নন, কেউ তাঁর পুত্র নয়। যদি থাকতো তাহলে আল্লাহ্র মাঝে মানবিক বা প্রাণীর বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকতো। কিন্তু আল্লাহ্ এসব থেকে পূত ও পবিত্র।
পঞ্চমতঃ বিশ্ব ভূবনের এমন কিছু নাই যাকে আল্লাহ্র সাথে তুলনা করা যায়। আল্লাহ্র গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য অতুনীয়।
৬২৯৭। আল্লাহ্র একত্ব ও অদ্বিতীয় ধারণা বহু ঈশ্বরবাদের ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। বহু ঈশ্বর বাদের ধারণাতে মানুষ বিশ্বাস করে বহু দেব-দেবতায় যাদের বিভিন্ন ধরণের শক্তি বিদ্যমান। এই আয়াত দ্বারা সেই ধারণাকে সমূলে ধ্বংস করা হয়েছে।
২। আল্লাহ্ [ যিনি ] শ্বাশত,স্বনির্ভর ৬২৯৮;
৬২৯৮। 'Samad' এই শব্দটির অর্থ এক কথায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। শব্দটি দ্বারা দ্বিবিধ ভাব প্রকাশ করা হয় :
১) আল্লাহ্র অস্তিত্বই একমাত্র সত্য, এবং চিরস্থায়ী, আর সব কিছুই ক্ষণস্থায়ী।
২) আল্লাহ্ কারও উপরে নির্ভরশীল নন, বরং বিশ্বভূবনের সকল কিছুই তাঁর উপরে নির্ভরশীল।
৩। তিনি কাউকে জন্ম দেন নাই এবং তিনি নিজেও জন্ম গ্রহণ করেন নাই, ৬২৯৯;
৬২৯৯। এই আয়াত দ্বারা খৃষ্টবাদের 'পিতা-পুত্র ' ধারণার মূলে কুঠারাঘাত করা হয়েছে। খৃষ্টবাদে আল্লাহ্র গুণাবলীতে প্রাণী সুলভ প্রবৃত্তি আরোপ করা হয়েছে 'পিতা-পুত্র ' সম্পর্কের দ্বারা। এই আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ্ অনুরূপ অপবিত্রতা থেকে মুক্ত।
৪। এবং তাঁর সমতুল্য কেহ নাই।৬৩০০
৬৩০০। এই একটি লাইনে সকল যুক্তিকে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয়েছে। আমাদের সাবধান করা হয়েছে মানুষের সাধারণ প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে। সাধারণতঃ মানুষ নিজস্ব ধ্যান ধারণার বাইরে চিন্তা করতে ভালোবাসে না। সে কারণে মানুষ আল্লাহ্র গুণাবলীকেও মানুষের গুণাবলীর মোড়কে মুড়িয়ে দেখতে ভালোবাসে। সকল যুগেই দেখা যায় মানুষের এই প্রতারণামূলক অভ্যাস যে, মানুষ এবাদতের ব্যাপারে উপাস্য দেব-দেবীকে মানুষের তুল্য গুণাবলীতে ভূষিত দেখতে চায়। মানুষের এই প্রবণতাকে কঠোর ভাষাতে নিন্দা করা হয়েছে যে, মনে রাখতে হবে যে আল্লাহ্র সাথে তুলনীয় বিশ্বভূবনে কিছুই নাই। তিনি অতুলনীয়।