+
-
R
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : বিপদ ও বিপর্যয়ের সময়ে এই সূরা আশা ও উৎসাহের বার্তা বয়ে আনে। সূরা আদ দুহা অবতীর্ণ হওয়ার পর পরই এই সূরাটি অবতীর্ণ হয় এবং এই সূরার যুক্তি পূর্বের সূরার সম্পূরক অংশ বিশেষ।
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
৬১৮৮। দেখুন হযরত মুসার প্রার্থনার [ ২০: ২ ৫ ] আয়াত। এখানে 'বক্ষ' শব্দটি প্রতীক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। 'বক্ষ' হচ্ছে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, আবেগ, অনুভূতি, স্নেহ-ভালোবাসার কোষাগার স্বরূপ; যেখানে মানব জীবনের এসব অমূল্য সম্পদকে সযত্নে সঞ্চিত রাখা হয়। মানুষের চরিত্রের এসব গুণাবলী মানুষকে পশু থেকে দেবত্বে উন্নত করে। এই আয়াতে আল্লাহ্ রাসুলের (সা) মানবিক দোষত্রুটি দূর করে তাঁর বক্ষকে পবিত্র, প্রসস্ত ও উন্নত করার কথা ঘোষণা করেছেন,যেনো তিনি বিশ্বজগতের জন্য আল্লাহ্র রহমত স্বরূপ হতে পারেন। একমাত্র এরূপ উন্নত চরিত্রের অধিকারীই পারেন সাধারণ মানুষের দোষত্রুটিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে। পাপে কলুষিত সমাজকে পরিশুদ্ধ করার যে বিশাল দায়িত্ব ও এই দায়িত্ব পালনের যে কষ্ট ও তিক্ততা তাঁকে বহন করতে হয়েছে তা বহন করার শক্তি ও সাহস, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা আল্লাহ্ তাঁকে আত্মিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে দান করেন। [ কোন কোন সহীহ্ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, ফেরেশতাগণ আল্লাহ্র আদেশে বাহ্যতঃ তাঁর বক্ষ বিদরণ করে পরিষ্কার করেছিলেন। অনেক তফসীরকারগণ মনে করেন যে, উপরে বর্ণিত টিকাতে 'বক্ষ' প্রশস্ত করার অর্থ সেই বক্ষ বিদারণকেই বুঝানো হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে এটা বাহ্যিক কোন ব্যাপার ছিলো না। ]
৬১৮৯। দেখুন উপরের টিকা। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি ও স্বচ্ছ আবেগহীন মন নিয়ে বিচার করলে, সামান্য হলেও অনুভব করা সম্ভব যে, একজন ব্যক্তির পক্ষে সম্পূর্ণ আকণ্ঠ নিমজ্জিত পাপের বিরুদ্ধে একা সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া কি বিশাল দায়িত্ব, কি বিপুল ভার সেই দায়িত্বের। নিপীড়িত জনসাধারণকে অত্যাচার নির্যাতনের থেকে মুক্ত করার কি মহৎ সে সংগ্রাম। সেই কষ্টদায়ক সংগ্রামের কথাই এখানে আল্লাহ্ উল্লেখ করেছেন।
৬১৯০। বিশ্বনবীর চারিত্রিক মাধুর্য্য, গুণাবলী, মহত্ব, মানুষের জন্য তাঁর দয়া, মায়া, ভালোবাসা,নবুয়ত লাভের পূর্ব থেকেই সর্বজন বিদিত ছিলো। তাঁর নাম বিশ্ব সভায় সর্বকালের সর্বশ্র্রেষ্ঠ মানব রূপে স্বীকৃত বর্তমানে।
৬১৯১। বিশেষ গুরুত্ব বুঝানোর জন্য এই আয়াতটিকে পুণরাবৃত্তি করা হয়েছে। পৃথিবীর জীবন হচ্ছে "সংগ্রামের জীবন" যা দুঃখ,কষ্টে পরিপূর্ণ। যেখানেই বাঁধা, প্রতিবন্ধকতা, অশান্তি, যন্ত্রণা, সংগ্রাম, সেখানেই আল্লাহ্ তাঁর বান্দার জন্য সমাধানের পথ প্রশস্ত করেছেন ; সংগ্রামের বোঝা লাঘব করেছেন দুঃখ-কষ্টের উপশম করেছেন; সুখ ও শান্তির পথ উম্মুক্ত করেছেন। পৃথিবীর জীবন সংগ্রামকে, দুঃখ-কষ্টকে, বাঁধা -বিপত্তিকে তখনই সুখ-শান্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব, যদি আমরা আল্লাহ্র নির্দ্দেশিত পথে অটল থাকি, আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসে দৃঢ় থাকি এবং ধৈর্য্য অবলম্বন করে একমাত্র আল্লাহ্র উপরেই নির্ভরশীল হই। দুঃখের বোঝার লাঘব বা সংগ্রামের সমাধান যে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে ঘটবে এ কথা ভাবার অবসর নাই। কষ্টের যে স্বস্তি বা সমাধান আল্লাহ্ তা তার বান্দার জন্য সরবরাহ করে থাকেন সত্য, তবে বান্দাকে তা ধৈর্য্য, অধ্যাবসায় ও বিশ্বাসের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। সে কারণেই বলা হয়েছে " কষ্টের সাথে অবশ্যই আছে যন্ত্রণার লাঘব।" রাসুলকে (সা) সম্বোধনের মাধ্যমে এ এক বিশ্বজনীন উপদেশ।
৬১৯২। "যখনই অবসর পাও" - অর্থাৎ রাসুল (সা) যখনই তাঁর কর্তব্য কর্ম থেকে অবসর পান, দ্বীনের প্রচারই ছিলো রাসুলের (সা) সর্বাপেক্ষা বড় কর্তব্য কর্ম। সে এক বিশাল কর্ম জগত। ধর্মের প্রচার করা, সমাজের পাপকে সনাক্ত করে তার কলূষতা থেকে সমাজকে মুক্ত করা, মানুষের মাঝে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধের জন্ম দেয়া এবং মানুষকে সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করা - আরবের সেই অন্ধকারময় যুগে তা ছিলো এক বিশাল দায়িত্ব যার প্রকৃত স্বরূপ অনুভব ও অনুধাবন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তা সত্বেও এই বিশাল কর্মযজ্ঞের অবসরে আল্লাহ্ তাঁকে নির্জনে 'এবাদত ' করতে হুকুম দিয়েছেন। বাইরের পৃথিবীতে আল্লাহ্র বাণী প্রচার ও শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তাঁর জন্য কর্তব্য কর্ম। এই কর্তব্যের অবসরে বা বিরতি কালে তাঁকে আধ্যাত্মিক জগতের সাথে যোগযোগ করতে বলা হয়েছে যেনো তিনি আল্লাহ্র নিবিড় সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন।
আমরা সাধারণ মানুষ, বিশ্বনবীকে আদেশের মাধ্যমে এই আদেশ সাধারণ মানুষের জন্যও কার্যকর করা হয়েছে। নামাজের মাধ্যমে আমরা স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের সেই চেষ্টাই করে থাকি, আমাদের শত কর্তব্য কর্মের অবসরে।
৬১৯৩। মানুষের পার্থিব জীবনে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের অনুভূতি অর্জনের চেষ্টাই হবে সর্বশ্রেষ্ঠ চেষ্টা। পৃথিবীর জীবনের বাঁকে বাঁকে সাফল্য, সুনাম ইত্যাদির জন্য মানুষ সর্বান্তঃকরণে চেষ্টা করে যায়। এ সব অস্থায়ী জিনিষ অনেক সময়েই মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের বিকাশে বাঁধার সৃষ্টি করে। মানুষ ধ্যানে, জ্ঞানে, চিন্তায়, ভাবনায় পার্থিব উন্নতি ও সাফল্যের জন্য চেষ্টা করে যায়। ফলে হৃদয় কন্দরে আল্লাহ্র চিন্তার কোনও স্থান থাকে না। সে কারণেই বলা হয়েছে পার্থিব সকল কর্তব্য ও দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে সত্য, তবুও তারই মাঝে আল্লাহ্র ধ্যানে মনোনিবেশ করতে হবে, তাহলেই মানুষের সকল চিন্তা, ভাবনা, চাওয়া, পাওয়া অতিরঞ্জিত হয়ে, বদ্ধ সংস্কারে আবদ্ধ হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারে। কারণ আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের আকাঙ্খা হৃদয়ে স্থান লাভের ফলে আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো তাঁকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে। বিবেকের আলোতে এদের যাত্রা পথ হবে ভাস্বর ও পবিত্র। পার্থিব জগতের চাওয়া পাওয়ার জন্য তার হৃদয় আচ্ছন্ন ও মোহবিশিষ্ট হয়ে পড়বে না।
সূরা ইনশিরাহ্
সূরা ইনশিরাহ্ বা প্রসারতা লাভ করা - ৯৪
৮ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : বিপদ ও বিপর্যয়ের সময়ে এই সূরা আশা ও উৎসাহের বার্তা বয়ে আনে। সূরা আদ দুহা অবতীর্ণ হওয়ার পর পরই এই সূরাটি অবতীর্ণ হয় এবং এই সূরার যুক্তি পূর্বের সূরার সম্পূরক অংশ বিশেষ।
সূরা ইনশিরাহ্ বা প্রসারতা লাভ করা - ৯৪
৮ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। আমি কি তোমার বক্ষকে প্রসারিত করে দেই নাই ? ৬১৮৮
৬১৮৮। দেখুন হযরত মুসার প্রার্থনার [ ২০: ২ ৫ ] আয়াত। এখানে 'বক্ষ' শব্দটি প্রতীক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। 'বক্ষ' হচ্ছে জ্ঞান, প্রজ্ঞা, আবেগ, অনুভূতি, স্নেহ-ভালোবাসার কোষাগার স্বরূপ; যেখানে মানব জীবনের এসব অমূল্য সম্পদকে সযত্নে সঞ্চিত রাখা হয়। মানুষের চরিত্রের এসব গুণাবলী মানুষকে পশু থেকে দেবত্বে উন্নত করে। এই আয়াতে আল্লাহ্ রাসুলের (সা) মানবিক দোষত্রুটি দূর করে তাঁর বক্ষকে পবিত্র, প্রসস্ত ও উন্নত করার কথা ঘোষণা করেছেন,যেনো তিনি বিশ্বজগতের জন্য আল্লাহ্র রহমত স্বরূপ হতে পারেন। একমাত্র এরূপ উন্নত চরিত্রের অধিকারীই পারেন সাধারণ মানুষের দোষত্রুটিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে। পাপে কলুষিত সমাজকে পরিশুদ্ধ করার যে বিশাল দায়িত্ব ও এই দায়িত্ব পালনের যে কষ্ট ও তিক্ততা তাঁকে বহন করতে হয়েছে তা বহন করার শক্তি ও সাহস, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা আল্লাহ্ তাঁকে আত্মিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে দান করেন। [ কোন কোন সহীহ্ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, ফেরেশতাগণ আল্লাহ্র আদেশে বাহ্যতঃ তাঁর বক্ষ বিদরণ করে পরিষ্কার করেছিলেন। অনেক তফসীরকারগণ মনে করেন যে, উপরে বর্ণিত টিকাতে 'বক্ষ' প্রশস্ত করার অর্থ সেই বক্ষ বিদারণকেই বুঝানো হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে এটা বাহ্যিক কোন ব্যাপার ছিলো না। ]
২। এবং তোমার থেকে গুরুভার অপসারণ করি নাই, ৬১৮৯
৩। [এমন একটি ] বোঝা যা তোমার পিঠের জন্য ছিলো যন্ত্রণাদায়ক ?
৩। [এমন একটি ] বোঝা যা তোমার পিঠের জন্য ছিলো যন্ত্রণাদায়ক ?
৬১৮৯। দেখুন উপরের টিকা। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি ও স্বচ্ছ আবেগহীন মন নিয়ে বিচার করলে, সামান্য হলেও অনুভব করা সম্ভব যে, একজন ব্যক্তির পক্ষে সম্পূর্ণ আকণ্ঠ নিমজ্জিত পাপের বিরুদ্ধে একা সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া কি বিশাল দায়িত্ব, কি বিপুল ভার সেই দায়িত্বের। নিপীড়িত জনসাধারণকে অত্যাচার নির্যাতনের থেকে মুক্ত করার কি মহৎ সে সংগ্রাম। সেই কষ্টদায়ক সংগ্রামের কথাই এখানে আল্লাহ্ উল্লেখ করেছেন।
৪। এবং তোমার খ্যাতিকে কি উচ্চ মর্যদা দান করি নাই ? ৬১৯০
৬১৯০। বিশ্বনবীর চারিত্রিক মাধুর্য্য, গুণাবলী, মহত্ব, মানুষের জন্য তাঁর দয়া, মায়া, ভালোবাসা,নবুয়ত লাভের পূর্ব থেকেই সর্বজন বিদিত ছিলো। তাঁর নাম বিশ্ব সভায় সর্বকালের সর্বশ্র্রেষ্ঠ মানব রূপে স্বীকৃত বর্তমানে।
৫। সুতারাং প্রতিটি কষ্টের সাথে অবশ্যই আছে যন্ত্রণার লাঘব ; ৬১৯১
৬। নিশ্চয়ই,প্রতিটি কষ্টের সাথে অবশ্যই আছে যন্ত্রণার লাঘব।
৬। নিশ্চয়ই,প্রতিটি কষ্টের সাথে অবশ্যই আছে যন্ত্রণার লাঘব।
৬১৯১। বিশেষ গুরুত্ব বুঝানোর জন্য এই আয়াতটিকে পুণরাবৃত্তি করা হয়েছে। পৃথিবীর জীবন হচ্ছে "সংগ্রামের জীবন" যা দুঃখ,কষ্টে পরিপূর্ণ। যেখানেই বাঁধা, প্রতিবন্ধকতা, অশান্তি, যন্ত্রণা, সংগ্রাম, সেখানেই আল্লাহ্ তাঁর বান্দার জন্য সমাধানের পথ প্রশস্ত করেছেন ; সংগ্রামের বোঝা লাঘব করেছেন দুঃখ-কষ্টের উপশম করেছেন; সুখ ও শান্তির পথ উম্মুক্ত করেছেন। পৃথিবীর জীবন সংগ্রামকে, দুঃখ-কষ্টকে, বাঁধা -বিপত্তিকে তখনই সুখ-শান্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব, যদি আমরা আল্লাহ্র নির্দ্দেশিত পথে অটল থাকি, আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাসে দৃঢ় থাকি এবং ধৈর্য্য অবলম্বন করে একমাত্র আল্লাহ্র উপরেই নির্ভরশীল হই। দুঃখের বোঝার লাঘব বা সংগ্রামের সমাধান যে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে ঘটবে এ কথা ভাবার অবসর নাই। কষ্টের যে স্বস্তি বা সমাধান আল্লাহ্ তা তার বান্দার জন্য সরবরাহ করে থাকেন সত্য, তবে বান্দাকে তা ধৈর্য্য, অধ্যাবসায় ও বিশ্বাসের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। সে কারণেই বলা হয়েছে " কষ্টের সাথে অবশ্যই আছে যন্ত্রণার লাঘব।" রাসুলকে (সা) সম্বোধনের মাধ্যমে এ এক বিশ্বজনীন উপদেশ।
৭। সুতারাং যখনই তুমি [ বর্তমান কর্তব্য থেকে ] অবসর পাবে, তবুও কঠোর পরিশ্রম করে যাবে। ৬১৯২
৬১৯২। "যখনই অবসর পাও" - অর্থাৎ রাসুল (সা) যখনই তাঁর কর্তব্য কর্ম থেকে অবসর পান, দ্বীনের প্রচারই ছিলো রাসুলের (সা) সর্বাপেক্ষা বড় কর্তব্য কর্ম। সে এক বিশাল কর্ম জগত। ধর্মের প্রচার করা, সমাজের পাপকে সনাক্ত করে তার কলূষতা থেকে সমাজকে মুক্ত করা, মানুষের মাঝে সততা ও নৈতিক মূল্যবোধের জন্ম দেয়া এবং মানুষকে সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করা - আরবের সেই অন্ধকারময় যুগে তা ছিলো এক বিশাল দায়িত্ব যার প্রকৃত স্বরূপ অনুভব ও অনুধাবন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তা সত্বেও এই বিশাল কর্মযজ্ঞের অবসরে আল্লাহ্ তাঁকে নির্জনে 'এবাদত ' করতে হুকুম দিয়েছেন। বাইরের পৃথিবীতে আল্লাহ্র বাণী প্রচার ও শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তাঁর জন্য কর্তব্য কর্ম। এই কর্তব্যের অবসরে বা বিরতি কালে তাঁকে আধ্যাত্মিক জগতের সাথে যোগযোগ করতে বলা হয়েছে যেনো তিনি আল্লাহ্র নিবিড় সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন।
আমরা সাধারণ মানুষ, বিশ্বনবীকে আদেশের মাধ্যমে এই আদেশ সাধারণ মানুষের জন্যও কার্যকর করা হয়েছে। নামাজের মাধ্যমে আমরা স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের সেই চেষ্টাই করে থাকি, আমাদের শত কর্তব্য কর্মের অবসরে।
৮। এবং তোমার [সকল ] মনোযোগ তোমার প্রভুর প্রতি মনোনিবেশ কর। ৬১৯৩
৬১৯৩। মানুষের পার্থিব জীবনে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের অনুভূতি অর্জনের চেষ্টাই হবে সর্বশ্রেষ্ঠ চেষ্টা। পৃথিবীর জীবনের বাঁকে বাঁকে সাফল্য, সুনাম ইত্যাদির জন্য মানুষ সর্বান্তঃকরণে চেষ্টা করে যায়। এ সব অস্থায়ী জিনিষ অনেক সময়েই মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের বিকাশে বাঁধার সৃষ্টি করে। মানুষ ধ্যানে, জ্ঞানে, চিন্তায়, ভাবনায় পার্থিব উন্নতি ও সাফল্যের জন্য চেষ্টা করে যায়। ফলে হৃদয় কন্দরে আল্লাহ্র চিন্তার কোনও স্থান থাকে না। সে কারণেই বলা হয়েছে পার্থিব সকল কর্তব্য ও দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে সত্য, তবুও তারই মাঝে আল্লাহ্র ধ্যানে মনোনিবেশ করতে হবে, তাহলেই মানুষের সকল চিন্তা, ভাবনা, চাওয়া, পাওয়া অতিরঞ্জিত হয়ে, বদ্ধ সংস্কারে আবদ্ধ হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারে। কারণ আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের আকাঙ্খা হৃদয়ে স্থান লাভের ফলে আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো তাঁকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে। বিবেকের আলোতে এদের যাত্রা পথ হবে ভাস্বর ও পবিত্র। পার্থিব জগতের চাওয়া পাওয়ার জন্য তার হৃদয় আচ্ছন্ন ও মোহবিশিষ্ট হয়ে পড়বে না।